
প্রকাশিত: Sat, May 4, 2024 2:39 PM আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 12:38 AM
পৃথিবীর সকল দেশে ছাত্ররা রাজনীতি করে, করেছে, এখনো করে, ভবিষ্যতেও করবে
ইমতিয়াজ মাহমুদ : আমেরিকাতে ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে, পুলিশ ওদের গ্রেপ্তার করছে, গাড়ী ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা এখনো দখল করে রেখেছে ওদের ক্যাম্পাস, বিক্ষোভ চলছে আমেরিকার অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমেরিকার ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে প্যালেস্টাইনে ইসরাইলী গণহত্যার বিরুদ্ধে। ছাত্রদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে আমেরিকার প্রতিটি প্রান্তে, আমেরিকা ছাড়িয়ে ইউরোপেও। ফ্রান্সের ছাত্রদের বিক্ষোভের খবর দেখেছি, আমি নিশ্চিত ইউরোপের অন্যান্য স্থানেও কিছুদিনের মধ্যেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে। ইতিহাস সাক্ষী, ছাত্ররা সবসময়ই রাজনীতি করেছে, ছাত্ররা সবসময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপে ও আমেরিকার এসব ছাত্র বিক্ষোভের খবর দেখে আর আমার মনে পড়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করার পক্ষে যেসব 'পণ্ডিত' ফতওয়া ঝাড়ছিল ওদের কথা। মনে পড়ছে সেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকটির কথা যে সিরিয়াস চেহারা করে অকপটে মানুষের সামনে মিথ্যে কথা বলে, বলে কিনা পৃথিবীর কোন উন্নত দেশে ছাত্ররা রাজনীতি করে না।
পৃথিবীর সকল দেশে ছাত্ররা রাজনীতি করে, সবসময়ই করেছে, এখনো করে, ভবিষ্যতেও করবে। কিছুসংখ্যক মন্দবুদ্ধি ক্যারিয়ারিস্ট ধরনের লোকজন থাকে, ওদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও থাকে, যারা ছাত্রদের বলবে যে না, রাজনীতি করো না। পৃথিবীর ইতিহাসে ছাত্ররা সবসময়ই রাজনীতি করেছে, ছাত্র আন্দোলন সবসময়ই পৃথিবীর রাজনীতির গতিপথ পাল্টে দিয়েছে, ছাত্ররা সবসময়ই রাজনীতিতে পথ দেখিয়েছে। বাংলাদেশে তো বটেই বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি ইতিহাস তো আপনারা জানেনই আমাদের স্বাধীনতার জন্যে তো আমরা আমাদের সেসময়ের ছাত্রদের কাছে ঋণী। যারাই বলবে যে না, ছাত্রদের রাজনীতি করার দরকার নাই, আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন ওরা হয় মতলববাজ অথবা মূর্খ অথবা নিতান্ত বোকাসোকা ভালো মানুষ। আমি আমার ছাত্র জীবনে অনেকবার ওদের কথা শুনেছি, বলেছে যে তুমি ছাত্র মানুষ পড়াশুনা কর, রাজনীতি করা কি দরকার। পশ্চিমে ছাত্রদের এরকম আন্দোলন নতুন নয়।
ষাটের দশকে বিশ্বব্যাপী ছাত্ররা আন্দোলন করেছে শান্তির জন্যে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে, মানুষের অধিকারের জন্যে। এই যে এখন আমেরিকাতে আন্দোলন করছে ছাত্ররা, এই আমেরিকাতেই এই কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, এখানেই ১৯৬৮ সালে গৌরবোজ্জ্বল এক ছাত্র অভ্যুত্থান হয়েছিল। সেসময় বর্ণবাদ অবসানের দাবিতে ও ভিয়েতনামে অন্যায় যুদ্ধ বন্ধের দাবীতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ক্যাম্পাসের ভবনগুলিতে অবস্থান গ্রহণ করে অবরুদ্ধ করে রেখেছে দিনের পড় দিন, পুলিশ ছাত্রদের পিটিয়েছে, ধরে নিয়ে গেছে, কিন্তু আন্দোলন থামেনি।
গুগল করেন দুই মিনিট, বিস্তারিত ঘটনাবলী জানতে পারবেন। তখনো কিছু সংখ্যক লোক বলেছে যে না, ছাত্ররা এখন এইসব করবে? আমাদের যুদ্ধের সময়, যখন ছাত্র রাজনৈতিক কর্মীরা সব যুদ্ধে গেছে, তখনো আমাদের এখানে এরকম অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বা মুরুব্বিধরনের লোক ছিল যারা সামগ্রিকভাবে ছাত্রদেরকে বুদ্ধি দিয়েছে যে না, বাপুরা তোমরা এইসব গণ্ডগোলে যেও না।
ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রদেরকে বুঝিয়েছে, যেও না, তুমি এইসবে যেও না, তুমি পড়াশুনা শেষ করো, সুন্দর চাকরী পাবে, ভালো বৌ পাবে এইরকম কতকিছু। না, এরকম স্বার্থপর মুরুব্বিদের পাশাপাশি আমাদের জাহানারা ইমামের মতো মায়েরাও ছিলেন, যারা স্পষ্ট করে পুত্রকে বলেছে, যা, তোকে দেশের জন্যে কোরবানি করে দিলাম। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করবেন না। এটা হবে একটা অসভ্য বর্বর সিদ্ধান্ত, এটা হবে একটা মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ এবং এটা হবে ছাত্রদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে বামন করে রাখার একটা অশুভ পদক্ষেপ। লেখক: আইনজীবী। ১-৫-২৪। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
